***গবাদি পশুর কৃত্রিম প্রজনন নিঃসন্দেহ দেশ ও জাতির জন্য উন্নয়নমূলক একআধুনিক কার্যক্রম। কোন ঝামেলা ছাড়া অভিজ্ঞ পশুচিকিৎসক দিয়ে কৃত্রিমপ্রজননের কাজ করাতে হবে। প্রতি উপজেলাতে পশুসম্পদ উন্নয়নে সরকার একজন করেপশুচিকিৎসক নিয়োগ করেছেন। গরিব কৃষকসহ ওই এলাকার জনসাধরণ নানাবিধ পশুসমস্যার সমাধান পেয়ে থাকেন তাদের কাছ থেকে। এছাড়া বাংলাদেশ যুব উন্নয়নঅধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকেও পশুপালন ও তাররোগবালাইয়ের চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এক কথায় কৃত্রিমপ্রজননে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিব্যবহারের জন্য উন্নত ষাঁড়ের শুক্রাণু ব্যবহার ও সুস্থ গাভীর প্রজনন অঙ্গেস্থাপন করতে পারলে বছরে বাচ্চা উৎপাদন দু'লক্ষেরও বেশি পাওয়া সম্ভব।বাকৃবি এ ক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য পেয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ব্যাপকহারে এপ্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হলে শিগগিরই ডেইরি শিল্প কাঙ্খিত স্বপ্নে পৌছাতেপারবে।
সাধারণত ষাঁড়ের বীজ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট কয়েকটি পদ্ধতিরমাধ্যমে গাভীর প্রজনন অঙ্গে স্থাপন করাকে কৃত্রিম প্রজনন বলে। একটি ষাঁড়েরবীজ থেকে প্রতি বছর ৬০ থেকে ৮০টি গাভীর প্রজনন করানো সম্ভব। কিন্তুকৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ গাভী প্রজনন করানো যায়।স্বাভাবিকভাবে একটি ষাঁড়ের সর্বমোট ৭০০ থেকে ৯০০টি বাছুর প্রসবে ভূমিকারাখতে পারে। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে অনেকাংশে সংক্রামক ব্যাধি রোধ করাযায় এবং গাভী ষাঁড়ের দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হয় না।
আমাদের দেশেষাঁড়ের বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ, পরিবহন বা সংস্থাপনে অজ্ঞতার কারণে অনেক সময়গাভীর উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। কৃত্রিম প্রজনন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হলেভালর চেয়ে খারাপই হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গেরপ্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব, অসাবধানতা, জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারেপ্রক্রিয়াগত ত্রুটি-বিচ্যুতি এর জন্য দায়ী।
বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেষাঁড়ের অভাব থাকায় কৃত্রিম প্রজনন জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু কৃত্রিমপ্রজননে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পদ্ধতিগত ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং সংশ্লিষ্টব্যক্তিবর্গের অসাবধানতা ও অনভিজ্ঞতার কারণে নানা সমস্যার সন্মুখিন হতেহয়। কৃত্রিম প্রজননের ভাল দিক যেমন আছে তেমন এর খারাপ দিকও কিছু আছে।বাস্তবে দেখা যায় স্বাভাবিক প্রজনন অপেক্ষা কৃত্রিম প্রজননে গর্ভ সঞ্চারেরহার বেশ কম, বার বার গর্ভধারণ করাতে খরচও হয় বেশি। রোগাক্রান্ত ষাঁড়েরবীজ গাভীর প্রজনন অঙ্গে স্থাপন করা হলে পরবর্তীতে দেখা যায় নানাবিধসমস্যা। যার প্রভাব পরবর্তী বংশবিস্তারের উপর বর্তায়। এ ছাড়া অনেক গাভীবার বার গরম হয়ে থাকে। এক নিরীক্ষায় দেখা গেছে একটি গাভী গর্ভ সঞ্চারেরজন্য গড়ে ১৩ বার পর্যন্ত প্রজননের প্রয়োজন হতে পারে।
রাসায়নিকদ্রব্য, ধূলিকণা, মাত্রারিক্ত তাপমাত্রার সংস্পর্শে খুব সহজেই ষাঁড়ের বীজনষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার যে সমস্ত জিনিস পত্রের সংস্পর্শে বীজ আসে তাতেরাসায়নিক পদার্থ থাকলেও বীজ নষ্ট হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বীজতরল হলে কিংবা প্রজনন অঙ্গের বাইরে স্থাপন করা হলেও গাভী গর্ভধারণ করতেপারে না। ডিম্বাণু নির্গমনের আগে অথবা নির্গমনের পরে বীজ স্থাপন করলে গাভীরউর্বরতা হ্রাস পায়। তাই প্রথমবার বীজ স্থাপনের পর অন্তত ৬ ঘন্টা পরদ্বিতীয়বার বীজ স্থাপন করলে সুফল পাওয়া যায় বেশি। বীজ স্থাপনের সময়প্রজনন অঙ্গ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে গাভীর নানাবিধ সমস্যা হতে পারে।যেমন ব্রুসেলেসিস, ভিব্রিওসিস, ট্রাইকোমনোসিসসহ বিভিন্ন বংশগত রোগেরসন্মুখিন হতে হয়। এ জন্য কোন সমস্যা দেখা দিলে পশুচিকিৎকের পরামর্শ নেওয়াঅত্যন্ত জরুরি।
সরকার প্রশিক্ষণের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে যা পশুসম্পদ উন্নয়নে সহায়তা করবে।
গাভীগর্ভবতী কিনা, নিয়মিত গরম হয় কিনা তা নির্ণয় করা, উন্নত ও উর্বর ষাঁড়নির্বাচন করা, গাভীর গর্ভধারনের ক্ষমতা নির্ণয় করা, গর্ভধারনের হার বৃদ্ধিকরা, গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং ভেটেরিনারিয়ানের সাহায্যে গাভীরনিয়মিত পরিচর্যা ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তার দিয়েকরতে হবে।
কৃত্রিম প্রজননের জন্য ইতোমধ্যে খামারিদের সংগঠিত করাহয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলাতে। খামারিদের উৎপাদনমুখী সেবা ও প্রশিক্ষণ চলছে।অল্পদিনের মধ্যেই গরুর ব্যাপকহারে কৃত্রিম প্রজনন শুরু করা হবে বলে আশাকরছে তারা। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দুটি সমিতি ইতোমধ্যে নিবন্ধিতহয়েছে। আশা করা যাচ্ছে কৃত্রিম প্রজননের সফলতা বাংলাদেশের প্রতি ঘরে ঘরেপৌছে যাবে এবং দুধ উৎপাদনসহ গরুর সংখ্যা অধিকহারে বৃদ্ধি পাবে।
ইউনিয়নের উৎপাদিত শস্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শস্য হচ্ছে ধান। ধানের পরেই পাটের স্থান। এরপরে যেসব কৃষিজাত দ্রব্যের নাম করতে হয় সেগুলো হচ্ছে মাসকলাই ইত্যাদি ডাল জাতীয় শস্য। তৈল বীজের মধ্যে রয়েছে সরিষা ও তিল। গম জাতীয় খাদ্য শস্য উৎপন্ন হয়। এখানকার উল্লেখযোগ্য ফল হচ্ছে, তরমুজ, ক্ষীরা ইত্যাদি। এছাড়াও এ ইউনিয়নে আম, জাম,কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেল, সুপারি, তাল, খেজুর, জাম্বুরা (বাতাবি লেবু), লেবু, তেঁতুল, কামরাঙ্গা, জলপাই, বেল, ডালিম, আতা ইত্যাদি ফলও প্রচুর পরিমানে উৎপন্ন হয়। মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, ধনে, আদা ইত্যাদি মসলা জাতীয় শস্য, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, উচ্ছে, করলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দুল, শিম, বরবটি, কাকরল, ঢেড়শ, গোল আলু, বেগুন, টমেটো ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদি সবজি প্রচুর পরিমানে উৎপাদিত হয়। পূর্বে এই ইউনিয়নে আরো চাষ হতো মটর, ধুন্দা, ছোলা, ভুট্টা, মিষ্টি, আলু , মুগ ডাল, বোনা আমন ইত্যাদি প্রচুর পরিমানে আবাদ হতো।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস